বাঙালির সঙ্গে মিষ্টান্ন খাবারের অভ্যাস অনেক পুরনো। অতিথি আপ্যায়নের শুরু থেকে শেষ পাতে সবখানেই ভরসা মিষ্টান্ন। আর সেই মিষ্টান্ন যদি হয় সন্দেশ, তাহলে তো কথাই নেই। বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রকার সন্দেশ পাওয়া যায়।
বিশেষ করে জলভরা সন্দেশ, প্যারা সন্দেশ, গুড়ের সন্দেশ। যশোরের নলেন গুড়ের সন্দেশ, সাতক্ষীরার ছানার সন্দেশ এবং নওগাঁর প্যারা সন্দেশ দেশব্যাপী বিখ্যাত।
নওগাঁর সন্দেশের নাম এখন ছড়িয়ে পড়েছে বাঙালির ঘরে ঘরে। তবে ঠিক কখন থেকে নওগাঁয় সন্দেশের প্রচলন শুরু হয় তার ইতিহাস স্পষ্টভাবে পাওয়া যায় না।
লোকমুখে জানা যায়, প্রথম দিকে পূজামণ্ডপে দেব-দেবীর উপাসনায় ব্যবহার করা হতো প্যারা সন্দেশ। নওগাঁ শহরের কালীতলার মহেন্দ্রী দাসের হাতেই তৈরি হয়েছিল এই সন্দেশ। ভারতের বিহারের এক নবাবের মিষ্টি তৈরির কারিগর ছিলেন মহেন্দ্রী। বিহারের সেই নবাব কোনো এক যুদ্ধে পরাজিত ও নিহত হলে মহেন্দ্রী প্রাণের ভয়ে নওগাঁ শহরের কালীতলায় বসবাস শুরু করেন।
তাঁর হাত ধরেই পূজামণ্ডপে শুকনা এই মিষ্টির প্রচলন শুরু হয়। মহেন্দ্রীর ছেলে ধীরেন্দ্রনাথ দাসের কারিগর বিমল মোহন্তর বানানো সেই ‘প্যারা’ সন্দেশই সবচেয়ে বিখ্যাত এখন অবধি। এ ছাড়া টাঙ্গাইল জেলার জামুর্কীর কালিদাসের প্যারা সন্দেশও বেশ সুস্বাদু।
প্রথমে তরল দুধের সঙ্গে চিনি মিশিয়ে ভালোভাবে জ্বাল দিয়ে ক্ষীর বানিয়ে তৈরি করা হয় নওগাঁর বিখ্যাত সন্দেশ। ক্ষীর যখন শুকিয়ে জমাট বাঁধতে থাকে, তখন গরম ক্ষীর দুই হাতের তালুর মাঝে সামান্য চাপ দিয়ে তৈরি করা হয় বিখ্যাত এই মিষ্টান্ন।